1. abukowsarmithu@gmail.com : abu kowsarmithu : abu kowsarmithu
  2. admin@dainikalokitorupganj.com : admin :
শিল্প ও ভূমি মন্ত্রণালয়ের ‘নবাব’ সলিম উল্লাহর এক ডজন ফ্ল্যাট-প্লটের সন্ধান, দুদকের অনুসন্ধান শুরু - দৈনিক আলোকিত রূপগঞ্জ
শনিবার, ২৪ মে ২০২৫, ০১:০৬ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
তারেক রহমানের ৩১ দফা বাস্তবায়নে জাপানে স্বেচ্ছাসেবক দলের আলোচনা ও কর্মী সভা অনুষ্ঠিত  রূপগঞ্জে সরকারি মুড়াপাড়া কলেজ ছাত্রদলের নতুন কমিটিতে যারা আলোচনায় রূপগঞ্জে যুবদল নেতার আওয়ামী লীগের ত্রাণ বিতরণে ভিডিও ভাইরাল // পুরো এলাকায় জুড়ে আলোচনার ঝড় রূপগঞ্জে জ্বাতীয় শ্রমিক দিবস উপলক্ষে মিতা ফেব্রিক্স লিঃ এর পক্ষ থেকে নৈশ ভোজের আয়োজন রূপগঞ্জ উপজেলা পরিষদ কার্যালয় থেকে সাংবাদিকের মোটরসাইকেল চুরি জাল দলিল চক্রের ছত্রছায়ায় সাব-রেজিস্ট্রার মেহেদী হাসান: মোটা অঙ্কের ঘুষে চিরিরবন্দরে বদলি! রূপগঞ্জের দুই সাব-রেজিস্ট্রারের বিদায় সংবর্ধনা চাঁদাবাজি ও নারী কেলেঙ্কারির দায়ে চাকরি হারালেন আনন্দ টিভির ‘প্রশান্ত’ জমির ধরণ ও পরিমাণ ভেদে ঘুষ নির্ধারণ করে দিয়ে বিতর্কিত অবশেষে রূপগঞ্জের পূর্বাচল রাজস্ব সার্কেলের সেই এসিল্যান্ডের বদলি রূপগঞ্জের সহিতুন্নেছা পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের এসএসসি পরীক্ষার্থীদের বিদায় সংবর্ধনা

শিল্প ও ভূমি মন্ত্রণালয়ের ‘নবাব’ সলিম উল্লাহর এক ডজন ফ্ল্যাট-প্লটের সন্ধান, দুদকের অনুসন্ধান শুরু

  • প্রকাশিত : মঙ্গলবার, ২৫ মার্চ, ২০২৫
  • ৪৬ বার পাঠ করা হয়েছে
10 / 100

নিজস্ব প্রতিবেদক:

শিল্প ও ভূমি মন্ত্রণালয়ের সাবেক অতিরিক্ত সচিব মো. সলিম উল্লাহ (পরিচিতি নং ৬৩২৯) দীর্ঘ ১৬ বছর ধরে একই মন্ত্রণালয়ে ক্ষমতা ধরে রেখেছিলেন। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ, এত বছর একই দফতরে থেকে তিনি নিজের জন্য দুর্নীতির জাল বিস্তার করেছেন। নামকাওয়াস্তে সৎ কর্মকর্তা হিসেবে পরিচিত থাকলেও গোপনে তিনি বিপুল পরিমাণ সম্পদ গড়ে তুলেছেন। বর্তমানে তিনি কোনো মন্ত্রণালয়ে নেই, তবে তার অঢেল সম্পদের খোঁজ পাওয়ায় দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) তার বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু করেছে।

সরকারি নথি পর্যালোচনা ও সংশ্লিষ্ট সূত্রের তথ্যমতে, মো. সলিম উল্লাহ নিজের নামে না রেখে স্ত্রী, কন্যা ও নিকটাত্মীয়দের নামে ফ্ল্যাট, প্লট ও সম্পদ কিনেছেন। তার সম্পত্তির পরিমাণ এতটাই বেশি যে, অনেকেই তাকে ‘শিল্প মন্ত্রণালয়ের নবাব’ বলে ডাকেন।

১৬ বছর শিল্প মন্ত্রণালয়ে ক্ষমতার দাপট

দুদকের তদন্তে উঠে এসেছে, মো. সলিম উল্লাহ শিল্প মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ নীতিগত সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও বাস্তবায়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন। ফলে তিনি বিভিন্ন ব্যবসায়ী ও শিল্পপতিদের সঙ্গে গভীর সম্পর্ক গড়ে তোলেন। এই সম্পর্কের মাধ্যমেই ঘুষ, কমিশন ও অবৈধ লেনদেনের মাধ্যমে সম্পদের পাহাড় গড়েছেন।

তার বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত অর্থ দিয়ে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে জমি, বিলাসবহুল ফ্ল্যাট ও বাণিজ্যিক সম্পত্তি কিনেছেন। তার বিরুদ্ধে আরও অভিযোগ রয়েছে যে, তিনি ঘনিষ্ঠ কর্মকর্তাদের মাধ্যমে শিল্প মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প থেকে মোটা অঙ্কের অর্থ হাতিয়ে নিয়েছেন।

দুদকের তদন্তে দেখা গেছে, তার নামে সরাসরি সম্পদ না থাকলেও স্ত্রী, কন্যা ও নিকটাত্মীয়দের নামে এক ডজনেরও বেশি প্লট ও ফ্ল্যাট রয়েছে।

সলিম উল্লাহর বিপুল সম্পদের ফিরিস্তি

দুদকের অনুসন্ধান নথিতে দেখা গেছে, মো. সলিম উল্লাহ স্ত্রী, দুই কন্যা এবং শ্বশুরসহ নিকটাত্মীয়দের নামে ঢাকা শহরের অভিজাত এলাকাসহ বিভিন্ন স্থানে একাধিক ফ্ল্যাট ও প্লট কিনেছেন। এসব সম্পদের উৎস সম্পর্কে তিনি এখন পর্যন্ত কোনো ব্যাখ্যা দেননি।

রাজউকের প্লট ও জমি:রাজউক পূর্বাচল প্রকল্প (এফ ব্লক) – দুই মেয়ের নামে ৫ কাঠার করে দুটি প্লট (নম্বর: ৩৮২ ও ৩৮৩)। রাজউক উত্তরা অ্যাপার্টমেন্ট (দ্বিতীয় ফেজ) – স্ত্রীর নামে ১টি প্লট (ব্লক-এইচ, প্লট নং-২০২)।

ফ্ল্যাট ও বাড়ি:

জাপান গার্ডেন সিটি (মোহাম্মদপুর) – এখানে তার নামে ও স্ত্রীর নামে একাধিক ফ্ল্যাট রয়েছে।

বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা – একাধিক প্লট ও ফ্ল্যাট কিনেছেন।

মিরপুর ডিওএইচএস ও পার্শ্ববর্তী এলাকা – এখানে অন্তত পাঁচটি বড় ফ্ল্যাটের মালিক তিনি।

হাতিরঝিলের প্রবেশমুখে – একটি বিলাসবহুল ফ্ল্যাট রয়েছে, যার বাজারমূল্য কয়েক কোটি টাকা।

মগবাজার (৫৫৭/এ/১২, মধুবাগ) – ৫ কাঠার ওপর পাঁচতলা ভবন, যা তার শ্বশুরের নামে কিনেছেন বলে দুদকের নথিতে উল্লেখ আছে।

রাজউক হাতিরঝিল আবাসন প্রকল্প – ভবন-১, ফ্ল্যাট নং-এ-২।

তবে দুদকের নথিতে আরও কিছু সম্পদের উল্লেখ রয়েছে, যা তদন্ত চলাকালে প্রকাশ করা হতে পারে।

শিল্প মন্ত্রণালয়ের দুর্নীতির নেটওয়ার্ক ও সলিম উল্লাহর ভূমিকা

শিল্প মন্ত্রণালয়ে দীর্ঘ ১৬ বছর ধরে একই পদে থাকার কারণে সলিম উল্লাহর প্রভাব এতটাই বেড়ে গিয়েছিল যে, সেখানে দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের বদলি, ওএসডি বা চাকরি থেকে বরখাস্ত করার ক্ষমতাও তিনি রাখতেন। যেসব কর্মকর্তা তার দুর্নীতিতে বাধা দিতেন, তাদের চাকরি নিয়ে টানাটানি শুরু হয়ে যেত।

তদন্তে দেখা গেছে, তিনি একাধিক সরকারি প্রকল্পে দুর্নীতির মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা লুটপাট করেছেন। শিল্প মন্ত্রণালয়ের অধীনে বিভিন্ন সরকারি সংস্থার বাজেট অনুমোদন, উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন এবং সরকারি শিল্পপ্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন চুক্তির ক্ষেত্রে তার প্রভাব ছিল ব্যাপক।

বিশেষ করে, বিদেশি বিনিয়োগ আনয়ন, সরকারি শিল্পপ্রতিষ্ঠানের আধুনিকায়ন প্রকল্প, সরকারি শিল্পকারখানার জন্য কাঁচামাল ক্রয় এবং বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের বরাদ্দের ক্ষেত্রে তিনি কমিশন নিয়ে কাজ করতেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

দুদকের তদন্ত ও পরবর্তী পদক্ষেপ

দুদক জানিয়েছে, সলিম উল্লাহর সম্পদের প্রকৃত উৎস ও লেনদেনের নথিপত্র বিশ্লেষণ করা হচ্ছে। তার আয় ও সম্পদের মধ্যে বিশাল পার্থক্য পাওয়া গেলে দুর্নীতির অভিযোগে তার বিরুদ্ধে মামলা হতে পারে।

সরকারি নথি ও প্রাথমিক অনুসন্ধানের ভিত্তিতে দুর্নীতি দমন কমিশন তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করতে পারে বলে জানা গেছে। এর আগে তার বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে একাধিক অভিযোগ জমা পড়েছিল, যা তদন্তের আওতায় আনা হয়েছে।

সলিম উল্লাহর প্রতিক্রিয়া এ বিষয়ে জানতে চাইলে মো. সলিম উল্লাহ কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। তবে ঘনিষ্ঠ সূত্র জানায়, তিনি বর্তমানে তার সম্পদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ব্যস্ত রয়েছেন এবং রাজনৈতিক লবিংয়ের মাধ্যমে বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছেন।

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, সরকারের সদিচ্ছা থাকলে মো. সলিম উল্লাহর মতো দুর্নীতিবাজ আমলাদের আইনের আওতায় আনা সম্ভব। তবে প্রশাসনের ভেতরে থাকা তার শক্তিশালী নেটওয়ার্কের কারণে তাকে বিচারের মুখোমুখি করা সহজ হবে না।

চলবে

সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো সংবাদ পড়ুন
© All rights reserved © 2024
কারিগরি সহযোগিতায়: জাগো হোষ্টার বিডি